দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকার ও জামায়াত-শিবির প্রস্তুত ছিল

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ০৪ মার্চ, ২০১৩, ০৮:১৮:২২ রাত

জামায়াতে ইসলামী গতানুগতি কোন দল নয়। গতানুগতিক এই কারনে বললাম যে, আমরা দেখেছি বাংলাদেশ অনেকগুলো ইসলামী দল আছে তাদের নেতাদের মাঝে মতবিরোধ হলে তারা দল থেকে বের হয়ে অন্য দল গঠন করেছেন। কেউ বিএনপি থেকে বের হয়ে বিকল্পধারা ইত্যাদি করেছেন। আওয়ামীলীগ থেকে বের হয়ে কৃষক জনতালীগ ইত্যাদি করছেন, মোট কথা অন্যান্য দলে মতবিরোধ হলে মতে পার্থক্য হলে হয়তবা দল ভেঙ্গে দুই তিন হয়ে যায় অথবা দল থেকে বের হয়ে অন্য দল গঠন করেন আমাদের নেতারা। কিন্তু জামাতে সে রকম কিছু এই অবধি আমরা দেখিনি। তাই জামাতকে গতানুগতি নয় বলেছি। জামাতে চেইন অব কমান্ড আছে, সুশৃঙ্খল নিয়মনীতি আছে, কেডার বিত্তিক কর্মী বাহিনী আছে। তারা অনেক চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সিদ্ধান্তের একটি ভিত্তি থাকে, একটি চক থাকে। যেমন তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের যুদ্ধাপরাধী হিসাবে গ্রেরেফতার করে সরকার। পৃথীবিতে যত দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, যারা যুদ্ধাপরাধী সাবস্ত হয়েছেন, তারা বেকুসুর খালাস পাননি। এই বিষয়টি জামাত-শিবির ভাল ভাবেই জানেন। তাই আওয়ামীলীগ সরকার আমলে ট্রাইবুনাল যদি তেমন কোন রায় দেন. সে রায়ের প্রতিকার কিভাবে করা যায় তার একটা চক জামাতের অবশ্যই ছিল, এটা আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি।

ট্রাইবুনালের রায় যখন সমাগত তখন জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা করে আসছিল। আমি তখন বুঝতে পারিনি যে কেন জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা করছে ? তারাতো কোন বড় মাপের নেতাকে হত্যা করলে, কিছুটা সরকারকে বিপাকে ফেলা যেতো বা অন্য কোন উপায়ে ট্রাইবুনালকে বির্তকিত করতে পারতো, বর্তমানেও ট্রাইবুনাল কম বির্তকিত নয়। সরকার এই বিচারটাকে বির্তকের উর্ধ্বে রাখতে চাইলে, জাতীয় ঐক্যমত গঠন করতে পারতেন, আর্ন্তজাতীতিক মানের কিছু বিচারক বা জাতীয়সংজ্ঞের সহায়তায় কোন বিচারক নির্বাচন করা, কিছু প্রসিকিউটার দেশের বাহির থেকে এনে বা যে সকল দেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে সে সকল দেশ থেকে প্রসিকিউটর নিয়োগ দিলে, সরকারের কোন মন্ত্রী এমপিরা যদি বিচারের বিষয়ে কোন প্রকার মন্তব্য না করলে, ট্রাইবুনালের কাজ ট্রাইবুনাল করলে, কিন্ত সরকার তার কিছুই করেনি। অতীব দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, বর্তমান সবকটি করে ট্রাইবুনালকে বির্তকিত করেছেন। সরকার তাদের মিনুপিষ্টুতে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা বলে ক্ষমতায় আসে। তারা যখন দেখছেন যে যুদ্ধাপরাধের বিচার করা সম্ভব নয় তখন সরকার মানবতা বিরোধি অপরাধের বিচার করা শুরু করেছেন। যা হোক উক্ত মানবতাবিরোধি অপরাধে জামাতের র্শীষস্থানীয় নেতাদের গ্রেরেফতার করে এবং তাদের বির্তকিত ট্রাইবুনালে বিচারকার্য শুরু করে। অগত্যা জামায়াত-শিবির উক্ত বিচার মানতে বাধ্য হয়। যা আমি বলছিলাম, রাইবুনালের রায়ের দেয়ার সময় যখন আগত তখন জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা করে আসছিল। আমি তখন বুঝতে পারিনি যে কেন জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা করছে ? তবে মনে মনে ভেবেছিলম, কোন না কোন কারন আছে। তখন বিষয় স্পষ্ট না হলেও বর্তনামে আমার কাছে বিষয়টি ষ্পষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ তখন তারা পুলিশকে ক্ষেপিয়েছে, যখন তারা চরম আন্দোলন করবে, তখন যেন পুলিশ তাদেরকে গুলি করে, যা বর্তমানে শতভাগ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এদিকে সরকারও পরিস্থিতির জন্য পুস্তুত ছিল। না হলে শাহবাগের নাটক সাজিয়ে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বাইফোর্স আল্লামা সাঈদীর ঠুনকো বিচারে ফাঁসির আদেশ হয় কি ভাবে। যেখানে ইব্রাহীম চুট্টির বৌ এর এফআইআরে সাঈদীর নাম না থাকার পর, সুখরঞ্জন বালা ভাই এর হত্যাকান্ডে সাঈদীর বিরোদ্ধে স্বাক্ষী দিতে অস্বিকার করা সত্বেও কিভাবে ফাঁসির রায় হয়। আমারদের মাথা মু্ন্ডে ঢুকেনা। তাই বলছি সরকারও বর্তমানের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল। মোট কথা বর্তমানের পরিস্থিতির জন্য জামায়াত-শিবির ও সরকার প্রস্তুত ছিল। কিন্তু আমার বুঝে আসছে না যে, সরকারের শেষ সময়ে এসে কেন এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরী করেছে সরকার, অথচ বিএনপির কাউন্সিল শেষে তত্বাবধায়কের আন্দোলন যখন শুরু হবে তখন পরিস্থিতি আরো জটিলতর হবে। যদি বলি হলমার্ক, পদ্মাসেতু, দূর্নীতি, সরকারের ষ্পষ্ট ব্যর্থতাগুলো ঢাকার জন্য, তাও অসত্য হবে, কারন বিএনপির কাউন্সিল শেষে তত্বাবধায়কের আন্দোলনের সময় সেগুলো অটোমেটিক এসে যাবে। আপনারা আমার সাথে একমত হবেন কিনা জানি না, আমার মনে তৃতীয় কোন শক্তি এখানে পায়দা লুটতে চাচ্ছে। সেটা হল, বাংলাদেশের বামরা (সেকুলাররা) ও তথাকথিত প্রগতিশীলরা। আমরা আগ থেকে জানি যে, আওয়ামীলীগে প্রগতিশীলদের আধিপত্য বেশি যেমন বিএনপিতে ডানদের আধিপত্য বেশি। আওয়ামীলীগ বামদেরকে সরকারের অংশিদার করাতে তারা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে, তাদের প্রতাপ প্রভাবের ব্যাপিত হয়েছে। তারা ধরাকে শরা জ্ঞান করতে শুরু করেছে। আবার বাম নেতা হাসানুল হক ইনুকে ত্বথ্যমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়াতে সকল মিডিয়া বামদের করায়ত্বে চলে গেছে। ফলে সেই মিডিয়া টক শোগুলোতে দেখে দেখে বামদের বা বাম মনাদের উপস্থাপন করেছে, তাদের সংবাদ পরিবেশনায় বামদের কথা গুলোই প্রধান্য পাচ্ছ এবং সেই বাম শাহবাগিদের লাইফ দিখিয়ে সরকারের ও সরকারের কলাকুশলিদের হিসাবের এলোমেলো করে দিচ্ছে। পাড়া গাঁও ও লোকালয়গুলোর মানুষের ভরসা আঙ্খাংকা আমাদের প্রধান মন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছতেনা। যাদের মাধ্যমে পৌঁছবে তারা তো বাম কারন তারা প্রধানমন্ত্রীর আশে পাশে ঘুর ঘুর করছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বামরা তথা আপনারা যাই বুলুন মাদ্রাসা থাকবে, মসজিদ থাকবে, নামাজ রোজা ইবাদাত থাকবে কিন্ত ইসলামী দল থাকবে না মসলমানরা বুঝবে না বিশ্বাস করবেনা। তারা আপনাদেরকে ইসলামের শুত্রু ভাববে। ইতিহাস থেকে ফেলে দিবে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা তিনি শৈশব থেকে রাজনীতি দেখেছেন রাজনীতির সহিত জড়িত হয়েছেন। জাতীর এই ক্রান্তিলগ্নে আল্লাহর পর আপনি শেষ ভরসা। সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। আমরা শান্তিপ্রিয় নিরিহ জনতা, হিন্দু. বৌদ্ধ, মসলিম, খ্রিষ্টান ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে বাচতে চাই।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File